রাজধানীর গুলশান ও বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। বনানী ১১ নম্বর ব্রিজ এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধ ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে রিকশাচালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, গুলশানের বিভিন্ন সড়কে কিছু ব্যক্তি রিকশা চলাচলে বাধা দিচ্ছেন এবং রিকশার ওপর হামলা চালাচ্ছেন। একাধিক ভিডিওতে রিকশাচালক ও স্থানীয়দের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের দৃশ্য দেখা যায়।
গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোফিজুল ইসলাম জানান, “ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও গুলশান সোসাইটি যৌথভাবে গুলশানে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রতিবাদেই রিকশাচালকরা আন্দোলনে নেমেছেন।”
বনানী থানার পরিদর্শক একেএম মঈন উদ্দিন জানান, “আমরা রিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
১৯ এপ্রিল থেকে গুলশানে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়। ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর জোনাল নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ উল মোস্তাক বলেন, “ঢাকা উত্তরের প্রধান সড়কে মোটরচালিত ও প্যাডেল রিকশা—উভয়ই নিষিদ্ধ। গুলশান ও বনানী সোসাইটির দেওয়া পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে যে রিকশা চলছিল, সেই ব্যবস্থাও বাতিল করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, রিকশার লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ আজাজ জানিয়েছেন, ‘ট্র্যাপার’ স্থাপন এবং অভিযান চালিয়ে প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা সরানো হবে।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে হাইকোর্ট ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও, সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত পরে সেই আদেশে স্থিতাবস্থা জারি করেন। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, যানজট ও দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধির কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
তবে রিকশাচালক ও মালিকদের দাবি, ব্যাটারিচালিত রিকশাই তাদের প্রধান জীবিকার উৎস। এই নিষেধাজ্ঞা তাদের অর্থনৈতিকভাবে বিপন্ন করে তুলছে।
বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলাচল করে, যার মধ্যে বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। এমনকি, বহু পুরোনো প্যাডেল রিকশাও এখন ব্যাটারি ও মোটর সংযুক্ত করে অটোরিকশায় রূপান্তরিত হচ্ছে।